Read it in English | গবেষক এবং প্রতিবেদক: শামা সুলতানা আয়েশা আক্তার |
সকালের গুমোট আবহাওয়া, দুপুরে কাঠফাটা রোদ আবার বিকেলে হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি। আবহাওয়ার এই রূপবদলে সকলেই আরামদায়ক পোশাক পড়তে পছন্দ করে। আর এই তালিকায় সবার উপরে রয়েছে টি-শার্ট। শুধু তাই নয়, ফ্যাশন সচেতন তরুণ- তরুণীদের পছন্দের তালিকায়ও টি-শার্ট সবার আগে। টি-শার্টের গায়ে প্রিয় ব্যান্ডের নাম (কাকতাল, শিরোনামহীন, অর্থহীন ইত্যাদি), বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম-লোগো কিংবা কাস্টমাইজড কোনো ডিজাইন এখন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ছোট থেকে বড় সকলের মাঝে। অল্প পুঁজি নিয়ে কাস্টমাইজ টি-শার্টের ব্যবসা শুরু করা যায় বলে অনেকেই এই ব্যবসায় আগ্রহী। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে টি-শার্টের ব্যবসা শুরু করা যায়।
ব্যবসা পরিকল্পনা
টি-শার্ট ব্যবসা শুরু করার আগে একটি সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। কোনো প্রকার পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া ব্যবসা করা সম্ভব নয়। পরিকল্পনামাফিক ব্যবসা শুরু করতে পারলে তাড়াতাড়ি সফলতা আসবে।পরিকল্পনার শুরুতেই প্রতিষ্ঠানের নাম এবং লোগো ঠিক করে নিতে হবে। একইসাথে টি-শার্ট ব্যবসাকে ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে করার লক্ষ্য থাকলে প্রতিষ্ঠানের নাম ও লোগো রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। মানুষের কাছে খুব দ্রুত নিজের ব্যবসা সম্পর্কে জানানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পেইজ খুলতে হবে। এতে করে নিজের কাজ সম্পর্কে সহজেই মানুষকে জানানো যাবে।
সঠিক উৎপাদন পদ্ধতি নির্ধারণ
ব্যবসা শুরু করার আগে সঠিক উৎপাদন পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হবে। সাধারণত দুইভাবে টি-শার্ট ব্যবসা শুরু করা যায়। প্রথমত, নিজে কাস্টমাইজ করে টি-শার্টে ডিজাইন করা। কাস্টমারের অর্ডারের পর বাসায় বসে নিজে টি-শার্টে ডিজাইন করা। এক্ষেত্রে কিছু প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনতে হবে। যেমন- প্রিন্টার, কাটার, কম্পিউটার, হিটপ্রেস মেশিন, গ্রাফিক্স প্রোগাম এবং ট্রান্সফার পেপার।
দ্বিতীয়ত, লোকাল প্রিন্টের ব্যবসায়ীদের কাছে ডিজাইনের ছবি দেখালে তারা টি-শার্টে সেই ডিজাইন করে দেন। এক্ষেত্রে তাদের সাথে কথা বলে চুক্তির মতো করা যায়। এতে সাশ্রয়ীমূল্যে কাজ করানো সম্ভব। নতুন ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা তুলনামূলক সহজ এবং সাশ্রয়ী।
সৃজনশীল কাস্টমাইজেশন
বর্তমানে টি-শার্ট ব্যবসায় সফল হতে চাইলে কাস্টমাইজেশনের বিকল্প নেই। ক্রেতার পছন্দ অনুযায়ী টি-শার্ট তৈরির চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। তবে শুরুতে ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ডিজাইনে সৃজনশীলতা দেখাতে হবে। ডিজাইন যতো বেশি ইউনিক এবং সৃজনশীল হবে ক্রেতা ততো বেশি আকৃষ্ট হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কিংবা ইন্সটাগ্রামে নিজের পেইজ থেকে টি-শার্টের ছবি কিংবা ডিজাইন করার ভিডিও পোস্ট করার মাধ্যমে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা যায়।
ডেলিভারি
ব্যবসার শুরুতেই টি-শার্ট ডেলিভারি নিয়ে পরিকল্পনা থাকতে হবে। টি-শার্ট ডেলিভারির জন্য বিভিন্ন ডেলিভারি কোম্পানির সাথে কথা বলে কোনো একটি কোম্পানির সাথে চুক্তি করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে ডেলিভারি করা সহজ হবে।
মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ডিং
ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য মার্কেটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টি-শার্ট সাধারণত তরুণ- তরুণীদের মধ্যে বেশি জনপ্রিয়। আর তাই মার্কেটিং করার সময় এই বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কিংবা ইন্সটাগ্রাম পেইজ থেকে টি-শার্ট বিক্রি শুরু করতে পারেন। তারপর দারাজ, আমাজনের মতো ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও টি-শার্ট বিক্রি করা যাবে। ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করতে হবে। ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় পর প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে।
নিজের সৃজনশীলতার প্রয়োগ করে কোনো ব্যবসা করতে চাইলে টি-শার্ট ব্যবসা একটি আর্দশ সিদ্ধান্ত হতে পারে। এই ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য ক্রেতার চাহিদার সাথে সবসময় তাল মিলিয়ে চলতে হবে। নিজের সৃজনশীলতা ব্যবহার করে নিত্যনতুন ডিজাইন তৈরির মাধ্যমে ফ্যাশন ট্রেন্ড শুরু হতে পারে আপনার প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে।
Comments