স্টার্টআপ মার্কেটিং

কেন বাংলাদেশে স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো হিমশিম খাচ্ছে?

0
Read it in English গবেষক এবং প্রতিবেদক: শামা সুলতানা ইসফাকুল কবির

বাংলাদেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম খুব দ্রুত বিকশিত হলেও, সম্প্রতি কিছু গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে বাজারে জায়গা করে নিতে চাওয়া স্টার্টআপ গুলো। ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪-এ এসে স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ জোগাড় করতে বেশি বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে। ২০২৩ এর শেষ তিন মাসে যেখানে  এসেছিল ২২ মিলিয়ন ডলার, সেখানে ২০২৪ এর প্রথম তিন মাসে স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগ ৭০% কমে দারিয়েছে ৭ মিলিয়ন ডলার। মূলত তিনটি প্রধান কারণেই স্টার্টআপগুলো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে  কষ্ট করছে। চলুন জেনে নেই সেই কারণ গুলো!

ফান্ডিং এর অভাবে স্টার্টআপ

বাংলাদেশের স্টার্টআপগুলোর জন্য সবথেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ফান্ডিং। শুরুর দিকে কোম্পানি গুলো বিনিয়োগ ম্যানেজ করতে  পারছে না। এর অন্যতম কারণ স্টার্টআপ সেক্টরে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখনও ঝুঁকি নিতে তেমন আগ্রহী নয়। তাই তহবিলের অভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক স্টার্টআপ বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে।

স্টার্টআপ কোম্পানির ফান্ডিং সংকট ও তার চ্যালেঞ্জ প্রদর্শনকারী একটি চিত্র।

ফান্ডিং সংকটে স্টার্টআপ কোম্পানি ও এর চ্যালেঞ্জ। | ছবি সংগৃহীত।

প্রশাসনিক জটিলতা

আমাদের দেশে ছোট থেকে ছোট কাজ করতে কত বার সরকারি অফিসে করা নাড়াতে হয়। একটি রেস্টুরেন্ট দিতেই প্রায় ৬ থেকে ৭টি সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমতি পত্র নিতে হয়। আর সেখানে বাংলাদেশে একটি আইটি স্টার্টআপ চালু করতে চাইলে আপনার লাইন ধরতে হবে ১০ থেকে ১২ টি সরকারি অফিসে। লাইসেন্সর থেকে শুরু করে নিবন্ধন, এবং অন্যান্য কাগজপত্র প্রস্তুতির জন্য দীর্ঘ সময় চলে যায় নতুন কোম্পানি গুলোর। অনেক উদ্যোক্তা এই জটিল প্রক্রিয়া পার করতে গিয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। তাই সরকারের উচিত দেশে এই প্রক্রিয়াগুলোর মান উন্নত করা এবং সবকিছু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে গ্রহকদের কাছে সহজ করে দেওয়া।

দক্ষ কর্মী সংকটে স্টার্টআপ

বাংলাদেশে দক্ষ কর্মীর বেশ অভাব । দেশের স্টার্টআপগুলোর জন্য সব থেকে বড় সমস্যা গুলোর মধ্যে একটি এই অভিজ্ঞ কর্মীর অভাব। প্রতি বছর দেশে আইটি সেক্টরে প্রায় ১৫,০০০ নতুন গ্র্যাজুয়েট যোগ হলেও, তাদের বেশিরভাগই স্টার্টআপ কোম্পানির চেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানে মোটা বেতনের চাকরি খোঁজে। অনেক কর্মীই স্টার্টআপে কাজ করতে চান না, কারণ সেখানে চাকরির নিরাপত্তা এবং অন্যান্য সুবিধা তুলনামূলক ভাবে কম থাকে। আর দক্ষ কর্মী ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানের বৃদ্ধি সম্ভব নয়।

স্টার্টআপ কোম্পানিতে দক্ষ কর্মীর অভাব এবং এর প্রভাব প্রদর্শনকারী একটি চিত্র।

দক্ষ কর্মীর অভাবে স্টার্টআপ কোম্পানির সংকট ও চ্যালেঞ্জ। | ছবি সংগৃহীত।

ই-কমার্স খাতের স্টার্টআপ গুলোর বর্তমান অবস্থা

ই-কমার্স খাত বর্তমানে অনেকটা বিকশিত হলেও এই সেক্টরেও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ এর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর টিকে থাকার সব থকে বড় সমস্যাগুলোর মধ্যে দুইটি হলো এক লজিস্টিক সমস্যা এবং দুই ক্রেতাদের নিম্ন ক্রয়ক্ষমতা। ২০২৪ সালে, ই-কমার্স খাতের কয়েকটি বড় কোম্পানি যেমন প্রিয় শপ- ৫ মিলিয়ন ডলার তহবিল পেয়েছে, কিন্তু এর পরেও অনেক ছোট কোম্পানি টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে।

দেশে স্টার্টআপের ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

উপরের চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে সরকার এবং বিনিয়োগকারীদের অবশ্যই আরও স্টার্টআপ কোম্পানি গুলোর সহযোগিতা সম্পন্ন হতে হবে। প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং দক্ষ কর্মী তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। এটি একটি বড় সমাধান। স্টার্টআপগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একটি শক্তিশালী, সুরক্ষিত এবং সহযোগিতাপূর্ণ ইকোসিস্টেমের প্রয়োজন। সঠিকভাবে বিনিয়োগ এবং পলিসি সমর্থন পেলে, বাংলাদেশের স্টার্টআপ খাত ভবিষ্যতে আরো শক্তিশালী হবে।

“তথ্যসূত্র”

কোনো ইনভেস্টমেন্ট ছাড়াই যেভাবে ড্রপশিপিং বিজনেস শুরু করবেন

Previous article

কীভাবে বাংলাদেশিরা বিদেশি শেয়ারে বিনিয়োগ করতে পারেন

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *