এন্ট্রেপ্রেনিউরশিপ

বিডিজবস্ : বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ চাকরির ওয়েবসাইট

0
Read it in English গবেষক এবং প্রতিবেদক: তানজিল ফুয়াদ ইসফাকুল কবির

এ. কে. এম. ফাহিম মাশরুর: বিডিজবস্ -এর প্রতিষ্ঠার গল্প

বাংলাদেশের ইন্টারনেট বিপ্লবের প্রথম দিকে ২০০০ সালে তরুণদের কাছে অনলাইনে চাকরির খবর নিয়ে এসেছিল বিডিজবস্ ডট কম। এটি বর্তমানে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ চাকরির ওয়েবসাইট । এটি বাংলাদেশের প্রথম এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় জব ওয়েব পোর্টাল হিসেবেও  স্বীকৃতি পেয়েছে। আর এই বিডিজবস্-এর প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর এমন একজন উদ্যমী উদ্যোক্তা যার যুগান্তকারী পরিবর্তন মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের কাছে তাদের চাকরি খোঁজার দৌড় কমিয়ে এনেছেন।

যেভাবে শুরু হয়েছিল বিডিজবস্

১৯৯৯ সালে, যখন বাংলাদেশে ইন্টারনেট এবং তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার তেমনভাবে হয়নি, তখন ফাহিম মাশরুর চেয়েছিলেন একটি এমন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে যেখানে চাকরিদাতারা সহজেই কর্মী খুঁজে পাবেন, আর চাকরিপ্রার্থীরা তাদের জন্য উপযুক্ত সুযোগ খুঁজে পাবেন। তৎকালীন সময়ে, কাজের বিজ্ঞপ্তি কেবল পত্রিকায় বের হতো। তাও আবার নির্দিষ্ট একটি পত্রিকায় সকল চাকরির খবর থাকতো না, তাই একজন চাকরিপ্রার্থীরাকে অনেক গুলো পত্রিকা সংগ্রহ করতে হতো। এই সমস্যা দূর করতে ফাহিমকে এবং তার ছয়জন বন্ধু মিলে বিডিজবস্ প্রতিষ্ঠা করেন।

বিডিজবস্ এর শুরু এবং তার সফলতার যাত্রা।

বিডিজবস্: বাংলাদেশের চাকরির বাজারে এক বিপ্লবী যাত্রার শুরু। | ছবি সংগৃহীত।

প্রথমে অনেক গুলো খবরের কাগজ থেকে তথ্য নিয়ে তারা তাদের ওয়েব সাইটে দিত। ফাহিম তার নিজের বাসার ড্রয়িং রুমে বিডিজবস্ এর যাত্রা শুরু করেন দুইজন কর্মচারী নিয়ে। প্রথম ৩ বছরে ১৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগের করেছিলেন। ফাহিম এবং তার বন্ধুরা মিলে তার পরে আর কোন বিনিয়োগের করতে হয়নি। ৩ বছর পর যখন বিডিজবস্-এ যখন মানুষ আসতে শুরু করলো তারপর ফাহিম বিভিন্ন কর্পোরেটদের কাছে যেতে শুরু করলেন। বিডিজবস্ তাদের বুঝিয়েছে যে আপনারা তো কর্মচারী খুঁজতে অনেক বেশি টাকা খরচ করেন। তবে আপনি চাইলে অনেক কম খরচে বিডিজবস্-এ কর্মচারী খুঁজতে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন।

বিডিজবস্-এর প্রতিষ্ঠাতা

বিডিজবস্-এর প্রতিষ্ঠাতা: বাংলাদেশের চাকরি খোঁজার প্ল্যাটফর্মের পেছনের মানুষ।

বিডিজবস্-এর প্রতিষ্ঠাতা: বাংলাদেশের চাকরি খোঁজার বিপ্লবী উদ্যোগের পিছনের মানুষ। | ছবি সংগৃহীত।

ফাহিম মাশরুরের জন্ম ঢাকা। তিনি আইডিয়াল হাই স্কুল থেকে মেট্রিক তারপর নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। তারপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স এবং মাস্টার্স শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর আইবিয়ে থেকে এমবিয়ে শেষ করেন বিডিজবস্ এর প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম। তিনি মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হয়েছেন। তার মা-বাবা ছিলেন সরকারি  চাকরিজীবী। ফাহিম এর মতে সে সময় তরুণদের ইচ্ছা ছিল যে হয় চাকরি করবে ব্যাংকে বা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে অথবা দেশীয় কোন কোম্পানিতে।

তার মতে সে সময় আরও একটা চল ছিল যে তরুণরা বিদেশ চলে যাবে। ফাহিম কখনোই নয়টা টু পাঁচটার জব এর ব্যাপারে কখনোই খুব একটা আগ্রহ ছিল না। সব সময় ছাত্র অবস্থাতেও একটু আউট অফ দা বক্স চিন্তা করতে চেয়েছিলেন তিনি। আর সেই ভাবনা থেকেই তৈরি আজকের বিডিজবস্। এছাড়া তিনি একটি অনলাইন ভিত্তিক শপিং মল চালু করেন আজকের ডিল নাম।

বর্তমান বিডিজবস্ এর অবস্থা

বিডিজবস্ এর প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম বলেন, “প্রতিদিন প্রায় ২ লক্ষ মানুষ আমাদের প্লাটফর্ম ব্যবহার করেন চাকরি খোঁজার জন্য।” বর্তমানে দেশের প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার কোম্পানি আছে যারা তাদের কোম্পানির জন্য মানুষ খোঁজেন এই বিডিজবস্ এ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে। বিডিজবস্ এর কার্যক্রম পরিচালনে করতে এখন তাদের ৩০০-র বেশি কর্মচারী আছে।

বর্তমান বিডিজবস্ এর অবস্থা এবং তার বিস্তৃতি বাংলাদেশের চাকরি বাজারে।

বর্তমান বিডিজবস্: বাংলাদেশের চাকরি বাজারে এর ভূমিকা ও উন্নতির গল্প। | ছবি সংগৃহীত।

বিডিজবস্ এর সফলতার চাবিকাঠি

বিডিজবস্-এর সফলতার পেছনে রয়েছে এর সহজ এবং ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস। চাকরিদাতারা যেমন স্বল্প খরচে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন, তেমন চাকরিপ্রার্থীরাও সহজে এবং বিনামূল্যে বিভিন্ন চাকরির তথ্য খুঁজে পেতে পারেন। এখন পর্যন্ত বিডিজবস্ কোন চাকরি প্রত্যাশীদের থেকে কোন টাকা নেয়নি। চাকরি প্রত্যাশীরা চাইলে তাদের নামে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে যার ফলে তারা তাদের আগ্রহের চাকরির বিজ্ঞাপন সবার আগে দেখতে পায়। মোট কথা বিডিজবস্ এর সহজ এবং সাবলীল ব্যবহার যোগ্যতা একে করেছে তুমুল জনপ্রিয়।

“তথ্যসূত্র”

কিভাবে ফেসবুকে কিছু বিক্রি করবেন

Previous article

ক্রেডিট না ডেবিট: কোন কার্ডের ব্যবহার অধিক সুবিধাজনক?

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *