মানি ম্যানেজমেন্ট এন্ড পার্সোনাল ফিনান্স

ক্রেডিট না ডেবিট: কোন কার্ডের ব্যবহার অধিক সুবিধাজনক?

0
Read it in English গবেষক এবং প্রতিবেদক: তানজিল ফুয়াদ আনিকা তায়্যিবা

দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেনে ব্যাংকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড ব্যবহার করা নতুন কিছু নয়। তবে কার্ড দুটো দেখতে অনেকটা একই রকম হলেও এদের মাঝে রয়েছে কিছু পার্থক্য । কোন কার্ডটি আপনার জন্য অধিক লাভের হবে জানতে হলে আগেই জেনে নিতে হবে কার্ডগুলোর বৈশিষ্ট্য ও লেনদেনের প্রক্রিয়া। চলুন জেনে নেই সেই সম্পর্কে-

ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা-অসুবিধাঃ

ক্রেডিট কার্ড মূলত আপনাকে নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ ঋণ নিতে সাহায্য করে। ক্রেডিট কার্ড প্রকারভেদ যেমন ভিন্ন, তেমনি ভিন্ন তাদের কাজের ধারা। যেমনঃ

ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে বিশ্লেষণমূলক চিত্র।

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা। | ছবি সংগৃহীত।

১। স্ট্যান্ডার্ড কার্ড: কেনাকাটা করার জন্য এই ক্রেডিট কার্ড একটি ক্রেডিট লাইন প্রদান করে। বেশিরভাগ সময়  স্ট্যান্ডার্ড ক্রেডিট কার্ডে কোন বার্ষিক ফি থাকে না।

২। প্রিমিয়াম কার্ড: বিভিন্ন বিশেষ সুবিধা যেমন বিমানবন্দরে ভি আই পি লাউঞ্জে অ্যাক্সেস বা অন্যান্য প্রিমিয়াম সুবিধার জন্য এই কার্ড ব্যবহার করা হয়। এই ধরণের ক্রেডিট কার্ডে সাধারণত বার্ষিক ফি এর হার বেশি হয়।

৩। ব্যালান্স ট্রান্সফার কার্ড: খুবই অল্প মুনাফায় বা লো ইনটারেস্টে ব্যালান্স ট্রান্সফার করার সুবিধা দেয় এই ক্রেডিট কার্ড।

সুবিধার কথা বলতে গেলে ক্রেডিট কার্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ক্রয় সুরক্ষা। অতিরিক্ত ওয়ারেন্টি, দাম সুরক্ষা এবং ক্রয় সুরক্ষা প্রদান করে ক্রেডিট কার্ড। এছাড়াও অজানা বা অনিবন্ধিত লেনদেনের জন্য জালিয়াতি সুরক্ষায়ও কাজ করে এই কার্ড। বিশেষ করে যারা প্রচুর কেনাকাটা বা ভ্রমণ করে থাকেন তাদের জন্য রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাকের সুবিধা দিয়ে থাকে বিভিন্ন ধরণের ক্রেডিট কার্ড।

তবে ক্রেডিট কার্ডের আছে কিছু অসুবিধাও, যেমন: কার্ডের ব্যালেন্স বা ঋণ পুরোপুরি পরিশোধ না করলে ব্যবহারকারীকে সুদ দিতে হয় যা ব্যবহারকারীর জন্য ঋণের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।

ডেবিট কার্ডের সুবিধা-অসুবিধাঃ

ডেবিট কার্ডে ক্রেডিট কার্ডের মতো ঋণ নেয়ার সুযোগ নেই। ডেবিট কার্ড সরাসরি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে খরচ করা অর্থ কেটে নেয়, ফলে আপনি ব্যয় করতে পারেন কেবল আপনার অ্যাকাউন্টে জমা থাকা অর্থই। প্রকারভেদে বিভিন্ন ডেবিট কার্ড রয়েছে, যেমন:

ডেবিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে আর্থিক ব্যবস্থাপনার সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা তুলে ধরা হয়েছে।

ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে নিরাপদ লেনদেন এবং সম্ভাব্য সমস্যার চিত্র। | ছবি সংগৃহীত।

১। স্ট্যান্ডার্ড ডেবিট কার্ড: যেই ডেবিট কার্ড আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সাথে সংযুক্ত থাকে এবং আপনি ইচ্ছামত আপনার অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ ব্যয় করতে পারেন।

২। প্রিপেইড ডেবিট কার্ড: যতটুকু অর্থ লোড করবেন সেই পরিমাণ পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন এই কার্ডে।

৩। ইবিটি কার্ড: বিভিন্ন সরকারী সুবিধা পেতে ব্যবহৃত হয় এই ডেবিট কার্ড।

ডেবিট কার্ডের সব চাইতে বড় সুবিধা হলো ঋণমুক্ত থাকা। কারণ, আর্থিক লেনদেনে নিজের অর্থ ব্যবহার হওয়ায় এতে ঋণ নেওয়ার দরকার পড়ে না। এছাড়া ডেবিট কার্ডে কোন বার্ষিক ফি নেই ফলে বাড়তি খরচের হাত থেকেও বেঁচে যান ব্যবহারকারীরা।

ডেবিট কার্ডের অসুবিধা হলো সাধারণত ক্রেডিট কার্ডের মতো ডেবিট কার্ডে রিওয়ার্ডস এর সিস্টেম থাকেনা, ফলে ডেবিট কার্ড  ব্যবহারকারী আকর্ষণীয় রিওয়ার্ডস পয়েন্ট থেকে বঞ্চিত হন।

প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক কার্ড নির্বাচন

প্রয়োজন অনুযায়ী ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের সঠিক নির্বাচন নিয়ে নির্দেশনামূলক চিত্র।

প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক কার্ড নির্বাচন করার উপায়। | ছবি সংগৃহীত।

ক্রেডিট কার্ড এবং ডেবিট কার্ড কোনটি নির্বাচন করবেন তা নির্ভর করবে আপনার অর্থনৈতিক লক্ষ্য, আর্থিক চাহিদা এবং ব্যয়ের অভ্যাসের উপর। যদি আপনি ক্রেডিট তৈরি করতে চান, খরচের পাশাপাশি রিওয়ার্ড পেতে চান এবং জালিয়াতি থেকে সুরক্ষা পেতে চান, তাহলে ক্রেডিট কার্ড আপনার জন্য উপযুক্ত। তবে সেই ক্ষেত্রে সময়মতো ব্যালেন্স পরিশোধ করতে হবে যেন আপনি ঋণ এড়াতে পারেন। তবে, যদি আপনি নির্দিষ্ট বাজেটের মধ্যে খরচ করতে চান এবং ঋণের ঝুঁকি এড়াতে চান, তাহলে ডেবিট কার্ড হতে পারে আপনোর জন্য ভালো বিকল্প। কারণ, এটি আপনার অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থের সীমার মধ্যে ব্যয় নিশ্চিত করে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুইটি কার্ডই যদি আপনি কৌশলগতভাবে ব্যবহার করেন, এর থেকে সর্বোত্তম সুবিধা পাবেন। তবে শুধুমাত্র একটি বেছে নিতে হলে, দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক সুরক্ষা ও আর্থিক প্রবৃদ্ধির জন্য ক্রেডিট কার্ড অধিক সুবিধাজনক।

“তথ্যসূত্র”

বিডিজবস্ : বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ চাকরির ওয়েবসাইট

Previous article

ক্যারিয়ার পরিকল্পনা ফ্রিল্যান্সিং,পার্ট-টাইম এবং ফুল-টাইম চাকরির তুলনামূলক বিশ্লেষণ

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *